০৫:৫২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৭ অক্টোবর ২০২৫
কোনো কাজই ছোট নয়, বললেন সাবেক শিক্ষক আবদুল লতিফ

কোনো কাজই ছোট নয়, বললেন সাবেক শিক্ষক আবদুল লতিফ

  • সেন্ট্রাল ডেস্ক নিউজ ডেস্ক
  • আপডেট: ০৮:৫৫:৫০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • ৫৬০

৩৮ বছরের শিক্ষকতা জীবনের অবসান ঘটিয়ে জীবনের শেষপ্রান্তে এসে জীবিকার প্রয়োজনে লেবু বিক্রি করছেন সাবেক শিক্ষক আবদুল লতিফ। ৭৪ বছর বয়সী এই মানুষটি মনে করেন, কোনো কাজই ছোট নয়। তাই আর্থিক স্বাচ্ছন্দ্য ও একাকীত্ব দূর করতে প্রতিদিন বিকেলে যশোর শহরের রাস্তায় বসে লেবু বিক্রি করেন তিনি।

১৯৭২ সালে প্রতিষ্ঠিত যশোর সদর উপজেলার পাঁচবাড়িয়া মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ে ইংরেজি শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন বাণিজ্যে স্নাতক আবদুল লতিফ। দীর্ঘ শিক্ষকতা জীবনে ছাত্রদের মাঝে জনপ্রিয় ছিলেন তিনি। ২০১৪ সালে অবসর গ্রহণের পর টিউশনি ও বাড়িভাড়া দিয়ে সংসার চালাতেন। তবে তিন বছর আগে অসুস্থ হয়ে পড়ায় টিউশনি বন্ধ করতে বাধ্য হন।

বর্তমানে বাড়িভাড়া থেকে মাসে প্রায় ৯ হাজার টাকা আয় হয়, আর প্রতিদিন বিকেলে লেবু বিক্রি করে অতিরিক্ত ১০০ থেকে ১৫০ টাকা উপার্জন করেন। তিনি বলেন, “৩৮ বছর শিক্ষকতা করেছি, শত শত ছাত্রীকে মানুষ করেছি। তারা আজ প্রতিষ্ঠিত। তবে বাড়িতে বসে একা থাকতে ভালো লাগে না। কিছুটা আয় হয়, আবার মানুষের সঙ্গে কথা বলারও সুযোগ মেলে।”

স্ত্রী মারা গেছেন তিন বছর আগে। একমাত্র ছেলে ঢাকায় চাকরি করেন। ছেলের পরিবার সঙ্গে থাকলেও নিঃসঙ্গতা কাটাতে প্রতিদিনই লেবুর দোকানে বসেন তিনি।

পাঁচবাড়িয়া মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের বর্তমান প্রধান শিক্ষক মো. আবু তাহের জানান, “আবদুল লতিফ স্যার অত্যন্ত ভালো মানুষ ছিলেন। অবসরের পরও মাঝেমধ্যে তার সঙ্গে দেখা হয়।”

সম্প্রতি যশোর প্রেসক্লাব সংলগ্ন মুজিব সড়কের ফুটপাতে বসে থাকা অবস্থায় সাবেক এই শিক্ষকের খোঁজখবর নেন ডা. মোসলেহ উদ্দিন ফরিদ। এ সময় তিনি আর্থিক সহায়তা প্রদান করেন এবং ভবিষ্যতে চিকিৎসার ক্ষেত্রে পাশে থাকার আশ্বাস দেন।

আবদুল লতিফের মতে, ইউরোপ-আমেরিকার মতো বাংলাদেশেও কোনো কাজকে ছোট মনে না করে সততা ও পরিশ্রমের মাধ্যমে জীবন এগিয়ে নেওয়াই উচিত।

সর্বাধিক পঠিত

বেনাপোল সীমান্তে বিজিবির বিশেষ অভিযানে বিপুল পরিমাণ মাদক ও চোরাচালান পণ্য জব্দ

কোনো কাজই ছোট নয়, বললেন সাবেক শিক্ষক আবদুল লতিফ

কোনো কাজই ছোট নয়, বললেন সাবেক শিক্ষক আবদুল লতিফ

আপডেট: ০৮:৫৫:৫০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫

৩৮ বছরের শিক্ষকতা জীবনের অবসান ঘটিয়ে জীবনের শেষপ্রান্তে এসে জীবিকার প্রয়োজনে লেবু বিক্রি করছেন সাবেক শিক্ষক আবদুল লতিফ। ৭৪ বছর বয়সী এই মানুষটি মনে করেন, কোনো কাজই ছোট নয়। তাই আর্থিক স্বাচ্ছন্দ্য ও একাকীত্ব দূর করতে প্রতিদিন বিকেলে যশোর শহরের রাস্তায় বসে লেবু বিক্রি করেন তিনি।

১৯৭২ সালে প্রতিষ্ঠিত যশোর সদর উপজেলার পাঁচবাড়িয়া মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ে ইংরেজি শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন বাণিজ্যে স্নাতক আবদুল লতিফ। দীর্ঘ শিক্ষকতা জীবনে ছাত্রদের মাঝে জনপ্রিয় ছিলেন তিনি। ২০১৪ সালে অবসর গ্রহণের পর টিউশনি ও বাড়িভাড়া দিয়ে সংসার চালাতেন। তবে তিন বছর আগে অসুস্থ হয়ে পড়ায় টিউশনি বন্ধ করতে বাধ্য হন।

বর্তমানে বাড়িভাড়া থেকে মাসে প্রায় ৯ হাজার টাকা আয় হয়, আর প্রতিদিন বিকেলে লেবু বিক্রি করে অতিরিক্ত ১০০ থেকে ১৫০ টাকা উপার্জন করেন। তিনি বলেন, “৩৮ বছর শিক্ষকতা করেছি, শত শত ছাত্রীকে মানুষ করেছি। তারা আজ প্রতিষ্ঠিত। তবে বাড়িতে বসে একা থাকতে ভালো লাগে না। কিছুটা আয় হয়, আবার মানুষের সঙ্গে কথা বলারও সুযোগ মেলে।”

স্ত্রী মারা গেছেন তিন বছর আগে। একমাত্র ছেলে ঢাকায় চাকরি করেন। ছেলের পরিবার সঙ্গে থাকলেও নিঃসঙ্গতা কাটাতে প্রতিদিনই লেবুর দোকানে বসেন তিনি।

পাঁচবাড়িয়া মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের বর্তমান প্রধান শিক্ষক মো. আবু তাহের জানান, “আবদুল লতিফ স্যার অত্যন্ত ভালো মানুষ ছিলেন। অবসরের পরও মাঝেমধ্যে তার সঙ্গে দেখা হয়।”

সম্প্রতি যশোর প্রেসক্লাব সংলগ্ন মুজিব সড়কের ফুটপাতে বসে থাকা অবস্থায় সাবেক এই শিক্ষকের খোঁজখবর নেন ডা. মোসলেহ উদ্দিন ফরিদ। এ সময় তিনি আর্থিক সহায়তা প্রদান করেন এবং ভবিষ্যতে চিকিৎসার ক্ষেত্রে পাশে থাকার আশ্বাস দেন।

আবদুল লতিফের মতে, ইউরোপ-আমেরিকার মতো বাংলাদেশেও কোনো কাজকে ছোট মনে না করে সততা ও পরিশ্রমের মাধ্যমে জীবন এগিয়ে নেওয়াই উচিত।