যশোরের লেবুতলা ইউনিয়নের দলেনগর আদবিয়া দারুল উলুম দাখিল মাদ্রাসায় অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর পদে অবৈধ নিয়োগ প্রক্রিয়া রুখে দিয়েছে স্থানীয় জনতা। অনিয়ম ও আর্থিক লেনদেনের অভিযোগ ওঠার পর শুক্রবার মাদ্রাসায় বসা নিয়োগ বোর্ড ভেস্তে দিয়েছেন বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসীরা।
অভিযোগ উঠেছে, মাদ্রাসার সুপার আবুল খায়ের এবং সভাপতি এনামুল হক চুন্নু মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে পছন্দের একজন প্রার্থীকে উক্ত পদে নিয়োগ দেওয়ার উদ্যোগ নেন।
যেভাবে ভেস্তে গেল নিয়োগ প্রক্রিয়া
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, তড়িঘড়ি করে কমিটি গঠন এবং সহকারী সুপার ও বিদ্যোৎসাহী সদস্যকে অন্ধকারে রেখে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন সুপার আবুল খায়ের। স্থানীয়দের দাবি, সুপার ও সভাপতি আগেই তাদের মনোনীত প্রার্থীর নাম ঠিক করে রেখেছিলেন এবং শুক্রবার লোক দেখানো নিয়োগ বোর্ডের আয়োজন করা হয়।
বিষয়টি জানতে পেরে সকালে স্থানীয়দের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। তারা একত্রিত হয়ে মাদ্রাসার সামনে বিক্ষোভ শুরু করেন এবং এক পর্যায়ে মাদ্রাসা ঘেরাও করে সভাপতি ও সুপারকে অবরুদ্ধ করে ফেলেন। জনতার তীব্র তোপের মুখে পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। পরে ঢাকা থেকে আসা নিয়োগ বোর্ডের সদস্য নিয়োগ বাতিল ঘোষণা করে মাদ্রাসা ত্যাগ করলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
টাকা লেনদেন ও রাজনৈতিক প্রভাবের অভিযোগ
স্থানীয়দের অভিযোগ, নিয়োগের নামে একজন প্রার্থীর কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা অগ্রিম নিয়েছিলেন অভিযুক্ত দুই দায়িত্বশীল। এছাড়াও মাদ্রাসার সভাপতি এনামুল হক চুন্নু ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক হিসেবে তার রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে ‘নিয়োগ বাণিজ্যে’ লিপ্ত ছিলেন বলেও অভিযোগ ওঠে।
অভিযুক্তদের অস্বীকার
নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অনিয়ম ও আর্থিক লেনদেনের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন মাদ্রাসার সুপার আবুল খায়ের। তিনি বলেন, “সব ধরনের নিয়ম মেনেই নিয়োগ শুরু হয়েছিল। কিন্তু স্থানীয় কয়েকজন এসে তাদের পছন্দের লোক নেওয়ার জন্য চাপ দেন। সেটি না মানায় তারা বাধা দেওয়ায় শেষ পর্যন্ত নিয়োগ স্থগিত করা হয়েছে।”
অন্যদিকে সভাপতি এনামুল হক চুন্নু টাকা-পয়সা লেনদেনের অভিযোগ ভিত্তিহীন দাবি করে বলেন, মিরাজ নামে একজনকে ওই পদে নিতে একটি পক্ষ চাপ সৃষ্টি করেছিল। তাদের পছন্দের লোক না নেওয়ায় তারা নিয়োগ প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত করেছে।