১০:১২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২১ নভেম্বর ২০২৫

মহেশপুর সীমান্তে ভারতের দখলে থাকা ৫ কিলোমিটার কোদলা নদী উদ্ধার করলো বিজিবি

  • সেন্ট্রাল ডেস্ক নিউজ ডেস্ক
  • আপডেট: ১১:২৪:০৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১ নভেম্বর ২০২৫
  • ৫৩৮

ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার সীমান্ত এলাকায় ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)-এর দখলে থাকা কোদলা নদীর প্রায় পাঁচ কিলোমিটার অংশ উদ্ধার করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। স্বাধীনতার পর থেকেই কোদলা নদীর বাংলাদেশ সীমান্তের ওই অংশে ভারত আধিপত্য বিস্তার করে রেখেছিল।
🗺 নদীর প্রকৃত অবস্থান ও বিজিবির পদক্ষেপ
সোমবার (৬ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় ৫৮ বিজিবির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়:
* কোদলা নদী বাংলাদেশের অভ্যন্তর থেকে দক্ষিণ দিকে প্রসারিত হয়ে মহেশপুরের মাটিলা এলাকায় ৪.৮০ কিলোমিটার দীর্ঘ বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত চিহ্নিত করেছে।
* ১৯৬১ সালে প্রণীত মানচিত্র অনুসারে কোদলা নদীর এই ৪.৮ কিলোমিটার অংশ সম্পূর্ণ বাংলাদেশ সীমান্তের শূন্য রেখার অভ্যন্তরে অবস্থিত।
সম্প্রতি বিষয়টি ৫৮ বিজিবির নজরে আসার পর, তারা প্রথমে নথিপত্র, স্থানীয় প্রশাসন ও মানচিত্র থেকে নদীর প্রকৃত অবস্থান নিশ্চিত করে। এরপর বিএসএফের অবৈধ আধিপত্য বিস্তারের বিষয়ে তীব্র প্রতিবাদ জানানো হয়। পরবর্তীতে বিজিবি সদস্যরা সাহসিকতা ও পেশাদারিত্বের সঙ্গে কোদলা নদী নিজেদের আয়ত্তে আনতে সক্ষম হন।
স্থানীয়দের স্বস্তি ও বিএসএফের বাধা
মহেশপুরের যাদবপুর ইউনিয়নের মাটিলা গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য মহিউদ্দীন জানান, এক সময় এই নদী থেকে প্রচুর মাছ আহরণ করা হতো। কিন্তু স্বাধীনতার পর কোদলা নদী পাড়ের মানুষজন বাংলাদেশের অভ্যন্তরে সরে গেলে বিএসএফ নদীর এই অংশ দখল করে নেয় এবং আধিপত্য বিস্তার শুরু করে।
ফলে স্থানীয় কৃষকরা মাঠে চাষাবাদ এবং নদীতে মাছ ধরতে যেতে পারতেন না, কারণ নদীর বাংলাদেশ অংশে গেলেই বিএসএফ বাধা দিত। নদী উদ্ধারের পর স্থানীয় জনসাধারণ এখন নির্বিঘ্নে কোদলা নদীতে যেতে পারছেন বলে জানিয়েছেন।
পরবর্তী পদক্ষেপ ও জনগণের প্রতি আহ্বান
নদী উদ্ধারের পর সোমবার দুপুরে মহেশপুর ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল শাহ মো. আজিজুস সহিদ স্থানীয় জনগণের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।
বিজিবি কর্মকর্তারা এই উদ্ধারে সহায়তার জন্য জনসাধারণকে ধন্যবাদ জানান এবং নদীর প্রকৃত অবস্থান ও মালিকানা সম্পর্কে পরবর্তী প্রজন্মকে অবগত রাখার জন্য অনুরোধ করেন। সেই সঙ্গে নদীর বাংলাদেশ অংশে প্রয়োজনীয় সেচ এবং চাষাবাদ চালু রাখার জন্য গ্রামবাসীকে অনুরোধ জানানো হয়। এ কাজে কোনো বাধার সৃষ্টি হলে সঙ্গে সঙ্গে বিজিবিকে অবহিত করতে বলা হয়েছে।
বর্তমানে বিজিবি সদস্যরা ওই এলাকার জন্য যন্ত্রচালিত বোট এবং নদীর পাড়ে দ্রুত টহলের জন্য অল টেরেইন ভেহিকেল (এটিভি) বরাদ্দ করার পাশাপাশি জনবল বৃদ্ধি করেছেন।

সর্বাধিক পঠিত

ধানের শীষের প্রার্থীর বিরুদ্ধাচরণ: ঝিকরগাছা উপজেলা ছাত্রদলের দুই নেতাকে শোকজ করলো কেন্দ্রীয় কমিটি

মহেশপুর সীমান্তে ভারতের দখলে থাকা ৫ কিলোমিটার কোদলা নদী উদ্ধার করলো বিজিবি

আপডেট: ১১:২৪:০৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১ নভেম্বর ২০২৫

ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার সীমান্ত এলাকায় ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)-এর দখলে থাকা কোদলা নদীর প্রায় পাঁচ কিলোমিটার অংশ উদ্ধার করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। স্বাধীনতার পর থেকেই কোদলা নদীর বাংলাদেশ সীমান্তের ওই অংশে ভারত আধিপত্য বিস্তার করে রেখেছিল।
🗺 নদীর প্রকৃত অবস্থান ও বিজিবির পদক্ষেপ
সোমবার (৬ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় ৫৮ বিজিবির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়:
* কোদলা নদী বাংলাদেশের অভ্যন্তর থেকে দক্ষিণ দিকে প্রসারিত হয়ে মহেশপুরের মাটিলা এলাকায় ৪.৮০ কিলোমিটার দীর্ঘ বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত চিহ্নিত করেছে।
* ১৯৬১ সালে প্রণীত মানচিত্র অনুসারে কোদলা নদীর এই ৪.৮ কিলোমিটার অংশ সম্পূর্ণ বাংলাদেশ সীমান্তের শূন্য রেখার অভ্যন্তরে অবস্থিত।
সম্প্রতি বিষয়টি ৫৮ বিজিবির নজরে আসার পর, তারা প্রথমে নথিপত্র, স্থানীয় প্রশাসন ও মানচিত্র থেকে নদীর প্রকৃত অবস্থান নিশ্চিত করে। এরপর বিএসএফের অবৈধ আধিপত্য বিস্তারের বিষয়ে তীব্র প্রতিবাদ জানানো হয়। পরবর্তীতে বিজিবি সদস্যরা সাহসিকতা ও পেশাদারিত্বের সঙ্গে কোদলা নদী নিজেদের আয়ত্তে আনতে সক্ষম হন।
স্থানীয়দের স্বস্তি ও বিএসএফের বাধা
মহেশপুরের যাদবপুর ইউনিয়নের মাটিলা গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য মহিউদ্দীন জানান, এক সময় এই নদী থেকে প্রচুর মাছ আহরণ করা হতো। কিন্তু স্বাধীনতার পর কোদলা নদী পাড়ের মানুষজন বাংলাদেশের অভ্যন্তরে সরে গেলে বিএসএফ নদীর এই অংশ দখল করে নেয় এবং আধিপত্য বিস্তার শুরু করে।
ফলে স্থানীয় কৃষকরা মাঠে চাষাবাদ এবং নদীতে মাছ ধরতে যেতে পারতেন না, কারণ নদীর বাংলাদেশ অংশে গেলেই বিএসএফ বাধা দিত। নদী উদ্ধারের পর স্থানীয় জনসাধারণ এখন নির্বিঘ্নে কোদলা নদীতে যেতে পারছেন বলে জানিয়েছেন।
পরবর্তী পদক্ষেপ ও জনগণের প্রতি আহ্বান
নদী উদ্ধারের পর সোমবার দুপুরে মহেশপুর ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল শাহ মো. আজিজুস সহিদ স্থানীয় জনগণের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।
বিজিবি কর্মকর্তারা এই উদ্ধারে সহায়তার জন্য জনসাধারণকে ধন্যবাদ জানান এবং নদীর প্রকৃত অবস্থান ও মালিকানা সম্পর্কে পরবর্তী প্রজন্মকে অবগত রাখার জন্য অনুরোধ করেন। সেই সঙ্গে নদীর বাংলাদেশ অংশে প্রয়োজনীয় সেচ এবং চাষাবাদ চালু রাখার জন্য গ্রামবাসীকে অনুরোধ জানানো হয়। এ কাজে কোনো বাধার সৃষ্টি হলে সঙ্গে সঙ্গে বিজিবিকে অবহিত করতে বলা হয়েছে।
বর্তমানে বিজিবি সদস্যরা ওই এলাকার জন্য যন্ত্রচালিত বোট এবং নদীর পাড়ে দ্রুত টহলের জন্য অল টেরেইন ভেহিকেল (এটিভি) বরাদ্দ করার পাশাপাশি জনবল বৃদ্ধি করেছেন।