০৪:৪৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২২ নভেম্বর ২০২৫

সুদানে ভয়াবহ গণহত্যা: তিন দিনে দেড় হাজার মানুষকে হত্যা করেছে আরএসএফ

  • সেন্ট্রাল ডেস্ক নিউজ ডেস্ক
  • আপডেট: ১১:০৬:৪৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১ নভেম্বর ২০২৫
  • ৫৪০

সুদানের দারফুর অঞ্চলের এল-ফাশার শহরে ভয়াবহ গণহত্যার ঘটনা সামনে এসেছে। আবুবকর আহমেদ নামে সরকারি বাহিনীর একজন সদস্য আল জাজিরাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, আধাসামরিক বাহিনী র‍্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ) বেসামরিক মানুষদের নির্বিচারে হত্যা করেছে এবং তাদের প্রতি কোনো দয়া দেখায়নি।
আত্মসমর্পণের পর গণহত্যা
আহমেদ জানান, তিনি দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে চলা গৃহযুদ্ধে সেনাবাহিনীর সহযোগী “পপুলার রেজিস্ট্যান্স” নামে স্থানীয় প্রতিরক্ষা গোষ্ঠীর হয়ে ৫৫০ দিন ধরে শহর রক্ষায় লড়েছেন। কিন্তু ২৬ অক্টোবর এল-ফাশার পতনের পর সেনাবাহিনী আত্মসমর্পণ করে এবং শহর থেকে সেনাদের সরিয়ে নেওয়ার চুক্তি হয়।
এর ফলে প্রায় ২ লাখ ৫০ হাজার সাধারণ মানুষ আরএসএফ-এর সামনে অসহায় হয়ে পড়ে।
আহমেদ, যিনি নিজেও পেটে রকেট হামলার শার্পনেলে আহত হয়ে প্রাণে বেঁচে যান, বলেন, আরএসএফ নির্মমভাবে বেসামরিক নাগরিকদের হত্যা করেছে এবং তাদের মরদেহ রাস্তায় ফেলে রেখেছে।
নিহতের সংখ্যা ও প্রমাণ
স্থানীয় পর্যবেক্ষক সংস্থা ডক্টরস নেটওয়ার্ক-এর তথ্য অনুযায়ী, শহর দখলের পর প্রথম তিন দিনে অন্তত দেড় হাজার মানুষকে হত্যা করেছে আরএসএফ। এর মধ্যে স্থানীয় আল-সৌদ হাসপাতালের ৪৬০ রোগী ও তাদের স্বজনও রয়েছেন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও এই তথ্য নিশ্চিত করেছে।
আল জাজিরার নিজস্ব যাচাই ইউনিট ‘সানাদ’ বেশ কয়েকটি ভিডিও যাচাই করেছে, যেখানে দেখা যায় আরএসএফ সেনারা মৃতদেহের স্তূপের পাশে দাঁড়িয়ে আছে এবং তারা নিরস্ত্র যুবকদের সারিবদ্ধভাবে গুলি করে হত্যা করছে।
এই গণহত্যার পর ৩৩ হাজারের বেশি মানুষ শহরটি ছেড়ে পালিয়েছেন। অনেকে পাশের তাওইলা ও টাইনের মতো প্রায় ৬০ কিলোমিটার দূরের শহরে আশ্রয় নিয়েছেন, তবে অধিকাংশই এখনও শহরের ভেতরে আটকা পড়ে আছেন অথবা মরুভূমি পেরিয়ে পালানোর চেষ্টা করছেন।
জাতিগত নিধনের অভিযোগ
আরএসএফ নেতা মোহাম্মদ হামদান হেমেদতি দাগালো বুধবার এক বক্তৃতায় সহিংসতার অভিযোগ তদন্তের আশ্বাস দিলেও, প্রত্যক্ষদর্শী ও বেঁচে ফেরা মানুষদের মতে, এটি অ-আরব জনগোষ্ঠীকে জাতিগতভাবে নিধন করার পরিকল্পিত প্রচেষ্টা।
ইয়েল হিউম্যানিটারিয়ান রিসার্চ ল্যাব (এইচআরএল) তাদের ২৮ অক্টোবরের প্রতিবেদনে জানিয়েছে, পালিয়ে যাওয়া মানুষদেরও আরএসএফ গণহারে হত্যা করছে। তবে স্যাটেলাইট ছবিতে এই হত্যার প্রকৃত পরিমাণ পুরোপুরি বোঝা সম্ভব নয়।

সর্বাধিক পঠিত

ধানের শীষের প্রার্থীর বিরুদ্ধাচরণ: ঝিকরগাছা উপজেলা ছাত্রদলের দুই নেতাকে শোকজ করলো কেন্দ্রীয় কমিটি

সুদানে ভয়াবহ গণহত্যা: তিন দিনে দেড় হাজার মানুষকে হত্যা করেছে আরএসএফ

আপডেট: ১১:০৬:৪৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১ নভেম্বর ২০২৫

সুদানের দারফুর অঞ্চলের এল-ফাশার শহরে ভয়াবহ গণহত্যার ঘটনা সামনে এসেছে। আবুবকর আহমেদ নামে সরকারি বাহিনীর একজন সদস্য আল জাজিরাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, আধাসামরিক বাহিনী র‍্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ) বেসামরিক মানুষদের নির্বিচারে হত্যা করেছে এবং তাদের প্রতি কোনো দয়া দেখায়নি।
আত্মসমর্পণের পর গণহত্যা
আহমেদ জানান, তিনি দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে চলা গৃহযুদ্ধে সেনাবাহিনীর সহযোগী “পপুলার রেজিস্ট্যান্স” নামে স্থানীয় প্রতিরক্ষা গোষ্ঠীর হয়ে ৫৫০ দিন ধরে শহর রক্ষায় লড়েছেন। কিন্তু ২৬ অক্টোবর এল-ফাশার পতনের পর সেনাবাহিনী আত্মসমর্পণ করে এবং শহর থেকে সেনাদের সরিয়ে নেওয়ার চুক্তি হয়।
এর ফলে প্রায় ২ লাখ ৫০ হাজার সাধারণ মানুষ আরএসএফ-এর সামনে অসহায় হয়ে পড়ে।
আহমেদ, যিনি নিজেও পেটে রকেট হামলার শার্পনেলে আহত হয়ে প্রাণে বেঁচে যান, বলেন, আরএসএফ নির্মমভাবে বেসামরিক নাগরিকদের হত্যা করেছে এবং তাদের মরদেহ রাস্তায় ফেলে রেখেছে।
নিহতের সংখ্যা ও প্রমাণ
স্থানীয় পর্যবেক্ষক সংস্থা ডক্টরস নেটওয়ার্ক-এর তথ্য অনুযায়ী, শহর দখলের পর প্রথম তিন দিনে অন্তত দেড় হাজার মানুষকে হত্যা করেছে আরএসএফ। এর মধ্যে স্থানীয় আল-সৌদ হাসপাতালের ৪৬০ রোগী ও তাদের স্বজনও রয়েছেন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও এই তথ্য নিশ্চিত করেছে।
আল জাজিরার নিজস্ব যাচাই ইউনিট ‘সানাদ’ বেশ কয়েকটি ভিডিও যাচাই করেছে, যেখানে দেখা যায় আরএসএফ সেনারা মৃতদেহের স্তূপের পাশে দাঁড়িয়ে আছে এবং তারা নিরস্ত্র যুবকদের সারিবদ্ধভাবে গুলি করে হত্যা করছে।
এই গণহত্যার পর ৩৩ হাজারের বেশি মানুষ শহরটি ছেড়ে পালিয়েছেন। অনেকে পাশের তাওইলা ও টাইনের মতো প্রায় ৬০ কিলোমিটার দূরের শহরে আশ্রয় নিয়েছেন, তবে অধিকাংশই এখনও শহরের ভেতরে আটকা পড়ে আছেন অথবা মরুভূমি পেরিয়ে পালানোর চেষ্টা করছেন।
জাতিগত নিধনের অভিযোগ
আরএসএফ নেতা মোহাম্মদ হামদান হেমেদতি দাগালো বুধবার এক বক্তৃতায় সহিংসতার অভিযোগ তদন্তের আশ্বাস দিলেও, প্রত্যক্ষদর্শী ও বেঁচে ফেরা মানুষদের মতে, এটি অ-আরব জনগোষ্ঠীকে জাতিগতভাবে নিধন করার পরিকল্পিত প্রচেষ্টা।
ইয়েল হিউম্যানিটারিয়ান রিসার্চ ল্যাব (এইচআরএল) তাদের ২৮ অক্টোবরের প্রতিবেদনে জানিয়েছে, পালিয়ে যাওয়া মানুষদেরও আরএসএফ গণহারে হত্যা করছে। তবে স্যাটেলাইট ছবিতে এই হত্যার প্রকৃত পরিমাণ পুরোপুরি বোঝা সম্ভব নয়।