নিজস্ব প্রতিবেদক
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে যশোর-১ (শার্শা) আসনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) মনোনীত ধানের শীষ প্রতীকপ্রাপ্ত প্রার্থী, সাবেক সংসদ সদস্য ও বিএনপি’র সাবেক কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক জনাব মফিকুল হাসান তৃপ্তি আজ ৯ নং উলাসী ইউনিয়ন বিএনপি আয়োজিত উঠান বৈঠকে অংশ নেন। অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে লিফলেট বিতরণ শেষে তিনি আয়োজকদের অক্লান্ত পরিশ্রমের জন্য আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
শার্শা থানা বিএনপির সহ-সভাপতি আমিনুর রহমান নেদার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে স্থানীয় বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
জিয়াউর রহমানের উত্তরাধিকার ও উন্নয়নের স্মৃতিচারণ:
মফিকুল হাসান তৃপ্তি শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের স্মৃতিচারণ করে বলেন, জিয়াউর রহমানই ছিলেন সারসা-শার্শা অঞ্চলের প্রকৃত উন্নয়নের রূপকার। তিনি খাল খনন কর্মসূচির মাধ্যমে এলাকার জলাবদ্ধতা দূর করে কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধিতে ভূমিকা রেখেছিলেন। কৃষি মন্ত্রণালয়ের তথ্যের উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি বলেন, যশোর জেলার মধ্যে শার্শা থানার মাটিই সবচেয়ে উর্বর। তিনি আরও বলেন, “এই ইউনিয়ন হচ্ছে জিয়াউর রহমানের ইউনিয়ন, বিএনপির ইউনিয়ন, তারেক রহমানের ইউনিয়ন।” ২০১৮ সালের ফ্যাসিবাদী সরকারের সময় সন্ত্রাসী ‘আয়নাল বাহিনী’র কারণে তিনি এই ইউনিয়নে পথসভা করতে পারেননি বলেও উল্লেখ করেন।
জামায়াতে ইসলাম প্রসঙ্গে কঠোর মন্তব্য:
দেশের রাজনীতিতে জামায়াতে ইসলামের ভূমিকা নিয়ে তিনি কঠোর সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, “যে অদৃশ্য শক্তি দীর্ঘদিন দেশের রাজনীতিতে অভিশাপ হয়ে আছে, তারা হলো জামায়াতে ইসলাম।” তিনি অভিযোগ করেন, জামায়াত ইসলামের নাম ব্যবহার করে জনগণকে প্রতারিত করছে, বিশেষ করে মা-বোনদের ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে বিভ্রান্ত করছে এবং নির্বাচনী ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। তিনি জোর দিয়ে বলেন, মা-বোনদের কর্মসংস্থান ও নিরাপত্তায় বিএনপি সরকারের অবদান সবচেয়ে বেশি ছিল এবং জামায়াত কখনো সুষ্ঠু নির্বাচন চায় না।
শার্শার উন্নয়নে প্রতিশ্রুতির বন্যা:
মনোনয়ন পাওয়ায় দলের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে মফিকুল হাসান তৃপ্তি জনগণের কাছে তার ভবিষ্যত পরিকল্পনার কথা তুলে ধরেন। তিনি তরুণদের ভোকেশনাল ট্রেনিং, দক্ষতা উন্নয়ন, কৃষকদের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করা এবং শিক্ষিত যুবকদের চাকরি পাওয়ার আগ পর্যন্ত বেকার ভাতা প্রদান করার প্রতিশ্রুতি দেন। এছাড়াও, বেনাপোল স্থলবন্দরকে ডিজিটালাইজড করে শার্শার যুবকদের জন্য নতুন কর্মসংস্থান তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হবে। তিনি বলেন, “জামাতের ষড়যন্ত্র থেকে আমাদের মা-বোনদের রক্ষা করতে হবে।”
আবেগঘন অঙ্গীকার:
আবেগাপ্লুত কণ্ঠে তিনি বলেন, “আমি শার্শার সন্তান। তাই আপনাদের থেকে দূরে যাওয়ার প্রশ্নই আসে না। সারাটা জীবন আপনাদের সাথেই থাকব।” জনপ্রতিনিধি না হয়েও বিগত দিনে তিনি জনগণের পাশে ছিলেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, “আপনাদের ভালোবাসা ও সমর্থনে যদি আমি এমপি নির্বাচিত হতে পারি, তবে বাংলাদেশের বুকে শার্শা থানাকে উন্নয়নের একটি রোল মডেল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করব।”
সর্বশেষে তিনি দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন, “শার্শার সন্তান হিসেবে আমার জীবন দিয়ে হলেও আমি আপনাদের সেবা করে যাব, এবং সেবায় যদি জীবন শেষ হয় তাতেও আমার কোনো কষ্ট নেই।”
উপস্থিত নেতৃবৃন্দ:
উঠান বৈঠকে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন যশোর জেলা যুবদলের যুব আহ্বায়ক ও শার্শা থানা যুবদলের সদস্য সচিব ইমদাদুল হক ইমদাদ, শার্শা থানা যুবদলের সিনিয়র যুব আহ্বায়ক আল মামুন বাবলু, বেনাপোল পৌর বিএনপি’র সহ-সভাপতি শাহাবুদ্দিন আহমেদ, বেনাপোল পৌর বিএনপি’র সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মেহেরুল্লাহ সহ বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ