০১:০৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ০৯ জুলাই ২০২৫

যশোরের ডিসি, ইউএনওসহ আটজনকে শোকজ, কাঁচামাল হাটে মডেল মসজিদ নিমার্ণের ব্যাখা চেয়েছে সুপ্রিম কোর্ট

  • সেন্ট্রাল ডেস্ক নিউজ ডেস্ক
  • আপডেট: ০১:০৫:১২ অপরাহ্ন, বুধবার, ৯ জুলাই ২০২৫
  • ৫০১

যশোরের ডিসি, ইউএনওসহ আটজনকে শোকজ, কাঁচামাল হাটে মডেল মসজিদ নিমার্ণের ব্যাখা চেয়েছে সুপ্রিম কোর্ট

নিজস্ব প্রতিবেদক
চৌগাছা কাঁচামাল হাটে ব্যবসায়ীদের ক্ষতি করে মডেল মসজিদ নির্মাণ অভিযোগে সচিব, যশোর জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তাসহ আটজনকে শোকজ করেছে সুপ্রিম কোর্ট। একই সাথে কেন ব্যবসায়ীদের ক্ষতি করে মসজিদ নিমার্ণের উদ্যোগ নেয়া হলো তার ব্যাখা জানতে চেয়েছে কোর্ট। সোমবার সুপ্রিম কোর্টের বিচারক আখতার হোসেন ও ফয়সাল হোসেন’র বেঞ্চে এ আদেশ দেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করে আইনজীবী এড. আমীর হোসেন বলেন, আতিকুর রহমান লেন্টু ১ কোটি ৭৭ লাখ টাকায় হাটের ইজারা নিয়েছি। ইজারা নেয়ার তিন মাসের মাথায় হাটের মাঝ খানে মডেল মসজিদ নিমার্ণ করা হবে বলে চুড়ান্ত হয়েছে। এবং চৌগাছা কাঁচামাল হাটের ৫৮ জন ব্যবসায়ী সম্মিলিতভাবে এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করে। ব্যবসায়ীদের ক্ষতি করে কেন মসজিদ নিমাণ করা হচ্ছে তার জবাব চেয়েছে মহামান্য সুপ্রিম কোট। একই সাথে সচিব, যশোরের ডিসি, চৌগাছা নিবার্হি কর্মকর্তাসহ আটজনকে শোকজ করেছে।

যশোর জেলা প্রশাসক আজাহারুল ইসলামকে একাধিকবার ফোন করে পাওয়া যায়নি। তবে চৌগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারজানা ইসলাম জানান, আমার একটি চিঠি পেয়েছি। আমরা মহামান্য আদালতকে কারণ দর্শনের ব্যাখা পাঠিয়ে দিবো।’

উল্লেখ্য, মসজিদ নিমার্নের প্রস্তাবের পর থেকে কাঁচামাল ব্যবসায়ীরা মসজিদটি অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। তাঁরা বলছেন, মসজিদটি এই ঐতিহাসিক হাট স্থানান্তরিত হলে অন্তত ৩ হাজার মানুষ জীবিকা সংকটে পড়বে।
ব্যবসায়ী মতবেল বিশ্বাস বলেন, চৌগাছা কাঁচামাল হাট শুধু একটি বাজার নয়, এটি এই অঞ্চলের অর্থনৈতিক প্রাণকেন্দ্র। বহু বছর ধরে এটি স্থানীয় কৃষক, ব্যবসায়ী এবং সাধারণ মানুষের আস্থার প্রতীক। কিন্তু এখন এই হাটের ঠিক মাঝখানেই মডেল মসজিদ নির্মাণের পরিকল্পনা করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, বাজারের দক্ষিণ-পশ্চিম কোণে যে জায়গাটি মসজিদের জন্য চিহ্নিত করা হয়েছে, সেখানে ১১০টি কাঁচামালের আড়ৎ রয়েছে। এছাড়াও আরও প্রায় ১৫০ জন সহযোগী ব্যবসায়ী এখানে কাজ করেন। এসব প্রতিষ্ঠানে মোট ৫ লক্ষ থেকে ৫০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগ করা হয়েছে। যদি এই স্থানে মসজিদ নির্মিত হয়, তবে অন্তত ২০০ পরিবার চরম আর্থিক দুর্দশার শিকার হবে।
চৌগাছা কাঁচামাল হাটের ৫৮ জন ব্যবসায়ী সম্মিলিতভাবে এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করেছেন। তাঁরা বলছেন, মসজিদ একটি পবিত্র স্থান, এটি অবশ্যই নির্মাণ হোক। কিন্তু এর জন্য কেন আমাদের শতবর্ষী হাটের বুকে আঘাত হানা হবে? মসজিদ অন্য যেকোনো স্থানে নির্মাণ করা সম্ভব, কিন্তু এই হাট যদি স্থানান্তরিত হয়, তবে অন্তত ৩ হাজার মানুষ সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হবে এবং তাদের পথে বসা ছাড়া আর কোনো উপায় থাকবে না।
হাটের ইজারাদার আতিকুর রহমান লেন্টু বলেন, ১ কোটি ৭৭ লাখ টাকায় হাটের ইজারা নিয়েছি। আমি তিন মাস ধরে ইজারা আদায় করছি। যদি এই স্থানে মসজিদ হয়, তাহলে আমার বিপুল অঙ্কের আর্থিক ক্ষতি হবে। একটি মহল আমাকে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করার জন্য ষড়যন্ত্র করছে এবং এর মাধ্যমে এই সর্ববৃহৎ কাঁচাবাজারকে ধ্বংস করার পায়তারা চলছে। তিনি হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, যদি এই স্থানেই মসজিদ নির্মাণ করতে হয়, তবে ইজারাদার ও ব্যবসায়ীদের উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।

সর্বাধিক পঠিত

যশোরের ডিসি, ইউএনওসহ আটজনকে শোকজ, কাঁচামাল হাটে মডেল মসজিদ নিমার্ণের ব্যাখা চেয়েছে সুপ্রিম কোর্ট

যশোরের ডিসি, ইউএনওসহ আটজনকে শোকজ, কাঁচামাল হাটে মডেল মসজিদ নিমার্ণের ব্যাখা চেয়েছে সুপ্রিম কোর্ট

আপডেট: ০১:০৫:১২ অপরাহ্ন, বুধবার, ৯ জুলাই ২০২৫

যশোরের ডিসি, ইউএনওসহ আটজনকে শোকজ, কাঁচামাল হাটে মডেল মসজিদ নিমার্ণের ব্যাখা চেয়েছে সুপ্রিম কোর্ট

নিজস্ব প্রতিবেদক
চৌগাছা কাঁচামাল হাটে ব্যবসায়ীদের ক্ষতি করে মডেল মসজিদ নির্মাণ অভিযোগে সচিব, যশোর জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তাসহ আটজনকে শোকজ করেছে সুপ্রিম কোর্ট। একই সাথে কেন ব্যবসায়ীদের ক্ষতি করে মসজিদ নিমার্ণের উদ্যোগ নেয়া হলো তার ব্যাখা জানতে চেয়েছে কোর্ট। সোমবার সুপ্রিম কোর্টের বিচারক আখতার হোসেন ও ফয়সাল হোসেন’র বেঞ্চে এ আদেশ দেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করে আইনজীবী এড. আমীর হোসেন বলেন, আতিকুর রহমান লেন্টু ১ কোটি ৭৭ লাখ টাকায় হাটের ইজারা নিয়েছি। ইজারা নেয়ার তিন মাসের মাথায় হাটের মাঝ খানে মডেল মসজিদ নিমার্ণ করা হবে বলে চুড়ান্ত হয়েছে। এবং চৌগাছা কাঁচামাল হাটের ৫৮ জন ব্যবসায়ী সম্মিলিতভাবে এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করে। ব্যবসায়ীদের ক্ষতি করে কেন মসজিদ নিমাণ করা হচ্ছে তার জবাব চেয়েছে মহামান্য সুপ্রিম কোট। একই সাথে সচিব, যশোরের ডিসি, চৌগাছা নিবার্হি কর্মকর্তাসহ আটজনকে শোকজ করেছে।

যশোর জেলা প্রশাসক আজাহারুল ইসলামকে একাধিকবার ফোন করে পাওয়া যায়নি। তবে চৌগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারজানা ইসলাম জানান, আমার একটি চিঠি পেয়েছি। আমরা মহামান্য আদালতকে কারণ দর্শনের ব্যাখা পাঠিয়ে দিবো।’

উল্লেখ্য, মসজিদ নিমার্নের প্রস্তাবের পর থেকে কাঁচামাল ব্যবসায়ীরা মসজিদটি অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। তাঁরা বলছেন, মসজিদটি এই ঐতিহাসিক হাট স্থানান্তরিত হলে অন্তত ৩ হাজার মানুষ জীবিকা সংকটে পড়বে।
ব্যবসায়ী মতবেল বিশ্বাস বলেন, চৌগাছা কাঁচামাল হাট শুধু একটি বাজার নয়, এটি এই অঞ্চলের অর্থনৈতিক প্রাণকেন্দ্র। বহু বছর ধরে এটি স্থানীয় কৃষক, ব্যবসায়ী এবং সাধারণ মানুষের আস্থার প্রতীক। কিন্তু এখন এই হাটের ঠিক মাঝখানেই মডেল মসজিদ নির্মাণের পরিকল্পনা করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, বাজারের দক্ষিণ-পশ্চিম কোণে যে জায়গাটি মসজিদের জন্য চিহ্নিত করা হয়েছে, সেখানে ১১০টি কাঁচামালের আড়ৎ রয়েছে। এছাড়াও আরও প্রায় ১৫০ জন সহযোগী ব্যবসায়ী এখানে কাজ করেন। এসব প্রতিষ্ঠানে মোট ৫ লক্ষ থেকে ৫০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগ করা হয়েছে। যদি এই স্থানে মসজিদ নির্মিত হয়, তবে অন্তত ২০০ পরিবার চরম আর্থিক দুর্দশার শিকার হবে।
চৌগাছা কাঁচামাল হাটের ৫৮ জন ব্যবসায়ী সম্মিলিতভাবে এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করেছেন। তাঁরা বলছেন, মসজিদ একটি পবিত্র স্থান, এটি অবশ্যই নির্মাণ হোক। কিন্তু এর জন্য কেন আমাদের শতবর্ষী হাটের বুকে আঘাত হানা হবে? মসজিদ অন্য যেকোনো স্থানে নির্মাণ করা সম্ভব, কিন্তু এই হাট যদি স্থানান্তরিত হয়, তবে অন্তত ৩ হাজার মানুষ সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হবে এবং তাদের পথে বসা ছাড়া আর কোনো উপায় থাকবে না।
হাটের ইজারাদার আতিকুর রহমান লেন্টু বলেন, ১ কোটি ৭৭ লাখ টাকায় হাটের ইজারা নিয়েছি। আমি তিন মাস ধরে ইজারা আদায় করছি। যদি এই স্থানে মসজিদ হয়, তাহলে আমার বিপুল অঙ্কের আর্থিক ক্ষতি হবে। একটি মহল আমাকে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করার জন্য ষড়যন্ত্র করছে এবং এর মাধ্যমে এই সর্ববৃহৎ কাঁচাবাজারকে ধ্বংস করার পায়তারা চলছে। তিনি হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, যদি এই স্থানেই মসজিদ নির্মাণ করতে হয়, তবে ইজারাদার ও ব্যবসায়ীদের উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।