।ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদিকে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তারসহ মোট তিন দফা দাবি জানিয়ে সরকারকে আল্টিমেটাম দিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) ভিপি সাদিক কায়েম। তিনি হুঁশিয়ারি দিয়েছেন যে, দাবিগুলো অবিলম্বে বাস্তবায়ন না হলে স্বরাষ্ট্র, আইন ও পররাষ্ট্র উপদেষ্টাকে পদত্যাগ করতে হবে।
সোমবার বিকেলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ঘেরাও কর্মসূচি শেষে এবং স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর সঙ্গে বৈঠক শেষে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে সাদিক কায়েম এই দাবি ও আল্টিমেটাম দেন।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে ১৪ সদস্যের প্রতিনিধিদলের বৈঠক শেষে ডাকসু ভিপি সাদিক কায়েম বলেন:
> “৩ দফা দাবি নিয়ে আমরা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ঘেরাও করেছি। এই দাবি অনতিবিলম্বে না মানা হলে এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির দৃশ্যমান পরিবর্তন না দেখাতে পারলে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা, আইন উপদেষ্টা এবং পররাষ্ট্র উপদেষ্টাকে পদত্যাগ করতে হবে।”
>
তিনি প্রধান নির্বাচন কমিশনারের বক্তব্যের সমালোচনা করে বলেন, ওসমান হাদির ওপর হামলাকে ‘বিচ্ছিন্ন ঘটনা’ বলার জন্য তিনি নিন্দা ও ঘৃণা জানাচ্ছেন এবং প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে বক্তব্য প্রত্যাহার করে জাতির কাছে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানান।
এছাড়াও, নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে প্রতিটি ওয়ার্ড ও মহল্লায় গণকমিটি গঠন করে ‘ফ্যাসিবাদের দোসরদের’ চিহ্নিত করে থানায় সোপর্দ করার আহ্বান জানান তিনি।
ডাকসু ভিপির ৩ দফা দাবি
সাদিক কায়েম গণমাধ্যমকর্মীদের সামনে তিনটি মূল দাবি তুলে ধরেন:
১. ওসমান হাদি হত্যাচেষ্টার বিচার:
* গুলিবর্ষণের সঙ্গে জড়িত প্রত্যক্ষ হামলাকারী, পরিকল্পনাকারী ও সহায়তাকারী সব সন্ত্রাসীকে দ্রুত গ্রেপ্তার করতে হবে।
* গোয়েন্দা সংস্থাসহ সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রের সব অর্গানকে দ্রুত জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে এবং গাফিলতি প্রমাণিত হলে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে।
* যারা এই হামলাকে সমর্থন যুগিয়েছে এবং ‘কালচারাল ফ্যাসিস্ট’ হিসেবে ওসমান হাদি ও জুলাই বিপ্লবীদের হত্যাযোগ্য করে তুলেছে, তাদের সামাজিকভাবে সম্পূর্ণ বয়কট করতে হবে। এসব ব্যবস্থা অবিলম্বে দৃশ্যমান করতে হবে।
২. নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে অভিযান:
* আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে এলাকাভিত্তিক চিরুনি অভিযান শুরু করতে হবে।
* নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠনের বিভিন্ন স্তরের সব সন্ত্রাসীকে গ্রেপ্তার করতে হবে এবং সব ধরনের অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করতে হবে। এ বিষয়ে সরকারের অবহেলা সহ্য করা হবে না।
৩. ভারতের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনর্বিবেচনা:
* ভারতীয় আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে খুনি হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে এনে তাঁর বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধে প্রদত্ত রায় কার্যকর করতে হবে।
* গণহত্যাকারী সন্ত্রাসীদের আশ্রয় দেওয়ার প্রতিবাদে ভারতের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনর্বিবেচনা করতে হবে এবং অভিযুক্তদের ফেরত না দেওয়া পর্যন্ত কূটনৈতিক সম্পর্ক স্বাভাবিক করা যাবে না।