০৫:৪০ অপরাহ্ন, সোমবার, ০১ ডিসেম্বর ২০২৫
প্রতিকার না পেয়ে এনসিপি নেত্রী শামীমা সুলতানা মায়ার পদত্যাগ ।

প্রতিকার না পেয়ে এনসিপি নেত্রী শামীমা সুলতানা মায়ার পদত্যাগ ।

  • সেন্ট্রাল ডেস্ক নিউজ ডেস্ক
  • আপডেট: ০৪:১৩:০৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • ৫৬২

: জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) রাজশাহী জেলা সমন্বয় কমিটির যুগ্ম সমন্বয়ক শামীমা সুলতানা মায়া পদত্যাগ করেছেন। কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে লিখিত অভিযোগ জানিয়েও কোনো প্রতিকার না পাওয়ায় তিনি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সকালে রাজশাহীর সাহেববাজার জিরোপয়েন্টে এক সংবাদ সম্মেলন করে তিনি তার পদত্যাগপত্রটি সাংবাদিকদের সামনে পড়ে শোনান।
মূল অভিযোগ
পদত্যাগপত্রে মায়া উল্লেখ করেন যে তিনি তার বিবেক ও নীতির সঙ্গে আপস করতে চান না। তিনি জানান, গত আগস্ট মাসে তিনি বেশ কিছু বিষয়ে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছিলেন, কিন্তু এক মাস পেরিয়ে গেলেও কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় তিনি পদত্যাগ করেছেন।
মায়ার অভিযোগ, এনসিপিতে পদ পাওয়ার পর তার কিছু ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হয়, যেখানে তাকে সাবেক সিটি মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন এবং তার স্ত্রী শাহীন আক্তার রেনীর সঙ্গে দেখা যায়। এরপর বিভিন্ন ফেসবুক আইডি থেকে তাকে ‘আওয়ামী দোসর’ বলে প্রচার চালানো হয়।
মায়া বলেন, “আমি কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত ছিলাম না, তবুও আমাকে নিয়ে যেভাবে অপপ্রচার চালানো হয়েছে, তা অত্যন্ত দুঃখজনক। এই বিষয়ে দল থেকে কোনো সহযোগিতা বা অবস্থান পাইনি।” তিনি জানান, এর ফলে তার ব্যক্তিগত, সামাজিক এবং ব্যবসায়িক জীবনে ব্যাপক নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে এবং তিনি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত।
দলের অভ্যন্তরীণ সংকট
মায়া আরও অভিযোগ করেন, রাজশাহীতে এনসিপির জেলা ও উপজেলা কমিটিগুলো কার্যত মহানগর কমিটির নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। জেলা কমিটির সদস্যরা স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারছেন না। দলের ভেতরে একটি গোষ্ঠী সবসময় তাদের কাজ বাধাগ্রস্ত করছে এবং অপমানজনক আচরণ করছে।
এনসিপির অভ্যন্তরীণ সংকট নতুন নয়। গত ২৫ জুন জেলা কমিটির দুই যুগ্ম সমন্বয়কারীর মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটে। অভিযোগ রয়েছে, নাহিদুল ইসলাম সাজু নামের এক নেতা অপর যুগ্ম সমন্বয়কারী ফিরোজ আলমকে লাথি মেরে হাসপাতালে পাঠিয়েছিলেন। পরদিন জেলা কমিটির প্রধান সমন্বয়কারী রাশেদুল ইসলামও পদত্যাগ করেন। এরপরও অভিযুক্ত নাহিদুলের বিরুদ্ধে কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে জানা যায়।
মায়া বলেন, “মিথ্যা অভিযোগ, বিভ্রান্তিমূলক প্রচারণা এবং দলীয় কার্যক্রমে অসঙ্গতির কারণে এই পদে থাকা আমার পক্ষে নৈতিকভাবে সম্ভব নয়।”
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নাহিদুল ইসলাম কোনো মন্তব্য করেননি। অন্যদিকে, এনসিপি মহানগর কমিটির প্রধান সমন্বয়কারী মোবাশ্বের আলী জানান, মায়াসহ তিন নেতার বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ-সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ রয়েছে। তিনি বলেন, এই তিনজনকে না সরালে অন্য জেলা ও মহানগর নেতারা একযোগে পদত্যাগের হুমকি দিয়েছেন। মায়া এই খবর জানতে পেরেই আগেভাগে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন।

সর্বাধিক পঠিত

খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় চৌগাছায় বিএনপির দোয়া মাহফিল,

প্রতিকার না পেয়ে এনসিপি নেত্রী শামীমা সুলতানা মায়ার পদত্যাগ ।

প্রতিকার না পেয়ে এনসিপি নেত্রী শামীমা সুলতানা মায়ার পদত্যাগ ।

আপডেট: ০৪:১৩:০৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫

: জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) রাজশাহী জেলা সমন্বয় কমিটির যুগ্ম সমন্বয়ক শামীমা সুলতানা মায়া পদত্যাগ করেছেন। কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে লিখিত অভিযোগ জানিয়েও কোনো প্রতিকার না পাওয়ায় তিনি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সকালে রাজশাহীর সাহেববাজার জিরোপয়েন্টে এক সংবাদ সম্মেলন করে তিনি তার পদত্যাগপত্রটি সাংবাদিকদের সামনে পড়ে শোনান।
মূল অভিযোগ
পদত্যাগপত্রে মায়া উল্লেখ করেন যে তিনি তার বিবেক ও নীতির সঙ্গে আপস করতে চান না। তিনি জানান, গত আগস্ট মাসে তিনি বেশ কিছু বিষয়ে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছিলেন, কিন্তু এক মাস পেরিয়ে গেলেও কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় তিনি পদত্যাগ করেছেন।
মায়ার অভিযোগ, এনসিপিতে পদ পাওয়ার পর তার কিছু ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হয়, যেখানে তাকে সাবেক সিটি মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন এবং তার স্ত্রী শাহীন আক্তার রেনীর সঙ্গে দেখা যায়। এরপর বিভিন্ন ফেসবুক আইডি থেকে তাকে ‘আওয়ামী দোসর’ বলে প্রচার চালানো হয়।
মায়া বলেন, “আমি কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত ছিলাম না, তবুও আমাকে নিয়ে যেভাবে অপপ্রচার চালানো হয়েছে, তা অত্যন্ত দুঃখজনক। এই বিষয়ে দল থেকে কোনো সহযোগিতা বা অবস্থান পাইনি।” তিনি জানান, এর ফলে তার ব্যক্তিগত, সামাজিক এবং ব্যবসায়িক জীবনে ব্যাপক নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে এবং তিনি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত।
দলের অভ্যন্তরীণ সংকট
মায়া আরও অভিযোগ করেন, রাজশাহীতে এনসিপির জেলা ও উপজেলা কমিটিগুলো কার্যত মহানগর কমিটির নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। জেলা কমিটির সদস্যরা স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারছেন না। দলের ভেতরে একটি গোষ্ঠী সবসময় তাদের কাজ বাধাগ্রস্ত করছে এবং অপমানজনক আচরণ করছে।
এনসিপির অভ্যন্তরীণ সংকট নতুন নয়। গত ২৫ জুন জেলা কমিটির দুই যুগ্ম সমন্বয়কারীর মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটে। অভিযোগ রয়েছে, নাহিদুল ইসলাম সাজু নামের এক নেতা অপর যুগ্ম সমন্বয়কারী ফিরোজ আলমকে লাথি মেরে হাসপাতালে পাঠিয়েছিলেন। পরদিন জেলা কমিটির প্রধান সমন্বয়কারী রাশেদুল ইসলামও পদত্যাগ করেন। এরপরও অভিযুক্ত নাহিদুলের বিরুদ্ধে কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে জানা যায়।
মায়া বলেন, “মিথ্যা অভিযোগ, বিভ্রান্তিমূলক প্রচারণা এবং দলীয় কার্যক্রমে অসঙ্গতির কারণে এই পদে থাকা আমার পক্ষে নৈতিকভাবে সম্ভব নয়।”
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নাহিদুল ইসলাম কোনো মন্তব্য করেননি। অন্যদিকে, এনসিপি মহানগর কমিটির প্রধান সমন্বয়কারী মোবাশ্বের আলী জানান, মায়াসহ তিন নেতার বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ-সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ রয়েছে। তিনি বলেন, এই তিনজনকে না সরালে অন্য জেলা ও মহানগর নেতারা একযোগে পদত্যাগের হুমকি দিয়েছেন। মায়া এই খবর জানতে পেরেই আগেভাগে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন।